Saturday, July 27, 2019

বিষণ্নতা

- নৃশংস বিষণ্ন কাউকে দেখেছিস কখনও সুপূর্ণা?

- কী?

- এই ধর চর দিগর বিধ্বংসী এক সাগরী ঝঞ্ঝা, তার আগ্রাসনের কর্কশ চিহ্ন ছড়িয়ে, দাজ্জাল তাণ্ডব সেরে চলে গেছে কিছুমাত্র আগে,
কিছু পরে হয়তো দাঁড়িয়ে আছিস সেই ক্ষোভে ফুঁসে চলা প্রতিস্পর্ধী নদী মোহনার পাশে,
দেখতে পাবি তাঁকে।
আবার ধর নোনতা বালিয়াড়িতে এক ইবলিশের বাচ্চা ঢেউ, ব্যাঙের লাখান জিভ বিছিয়ে, নাগাল পাওয়ার পর মুহূর্তে সড়াৎ গিলে ফেলেছে তরতাজা ছেলেটাকে,
সেক্ষণে দাঁড়িয়ে আছিস সমস্ত বোধ ঘুলিয়ে যাওয়া মায়ের পাশে,
দেখতে পাবি তাঁকে। 
নাহ, পরাভূতের দিকে চাইলে হবে না। পরাক্রমীর দিকে চাইলেও হবে না।
খলখল করে ঝাঁপান জোড়া ঢেউ পেরিয়ে চাইতে হবে প্রাত্যহিক রাক্ষুসেপনার ওধারে।
আত্মপক্ষ সমর্থনের কচকচি সরিয়ে, যেখানে গাঢ় অতি গাঢ় কালচে সবুজ জঙ্গম প্রান্তরেখাগুলি ধারণ করে আছে আদিগন্ত বিস্তৃত এক রাশ পিত্তিরঙ যন্ত্রণা,
যেখানে প্রতিপল অগণন জমাট পিণ্ড হতে চাইছে লুকোনো অনুশোচনা, সেই পানে চাইবি।
তবে দেখা যাবে।

- এত শক্ত কথা আমার বুঝতে ইচ্ছে করছে না রণজয়। সহজ হ। আমার তাড়া আছে।

- বেশ, তবে নিত্যদিন আঁচড়ে খামচে খোকার দুধ খেয়ে যাওয়া বেড়ালটাকে গর্তে পুঁতে ওজন সমান লবণ জলে ঢালতে যাওয়া খোকার মায়ের চোখের দিকে চেয়ে দেখিস একবার।
গোক্ষুর যখন মেঠো গুঁড়ো ওড়ায় দৃষ্টি সীমা জুড়ে।

- ঘন অভিমানী এক নৃশংস বিষণ্ণতা।

- এই তো! বেশ বুঝেছিস খানিক খানিক। এতেই হবে, কিম্বা, যেটুকু বোঝার বাইরে রয়ে গেল সেটুকুর জন্য... নিজের প্রতিবিম্ব দেখতে পারিস। আজ। লাল হলুদের ছোপ ধরা এই নিমন্ত্রণপত্রটি হাতে রেখে। কেমন?

- রণ! 

- মনকে ছুঁয়ে যে মিথ্যে বলা যায়না রে পাগলী!

No comments:

Post a Comment