Saturday, January 18, 2020

কাটাকুটি বন্দিশ

একসময় পেভমেন্টওয়ালা চওড়া পথ যা সিধে নিজেকে বিছিয়ে রেখেছে আমার নাক চোখ কুঁচকে দেখতে পাওয়ার পরেও কে জানে কত হাজার মাইল, তাকে উৎসবে নিজের বেণী বাঁধতে পাওয়া দুধারে চিকচিকে জরি সেলাই করা চকচকে কালো ফিতের সমান আবেগ ও আনন্দের কারণ মনে হত।

জেব্রাক্রসিং বস্তুটা আদতে হল খুব লক্ষ্মী, সমস্ত নিয়ম মানা শহুরে কচিকাঁচাদের কিতকিত খেলার একমাত্র মোক্ষম জায়গা, এক নিয়ম ভাঙা মফস্বলি খুকির ঠিক এরকম ঠাওরানোর বয়স সেটা।
...

আজকাল কোন কোন দিন কোনও চওড়া পথের পাশে দাঁড়ালে শিরশির করে পায়ের চেটো। অ্যাসফল্টে গড়া এক অনন্তপ্রসারী অত্যন্ত একঘেয়ে রঙা সরীসৃপের চামড়া ছাড়িয়ে রোদে শুকোচ্ছে নাগরিক যাপন। যা তার বহাল থাকার যাবতীয় রসদের জোগানদার।

গত্যন্তরহীন আমি সেটা পেরোতে গিয়ে হঠাৎই খেয়াল করি জেব্রাক্রসিং আড়েবহরে বেশ খানিকটা।
বিরক্তিকর রিফ্লেক্সে বাম পা কিতকিত খেলার শুরুয়াৎ করে ফেলেই হোঁচট খায়।
...

মুণ্ডুটার এক খোপের বাসিন্দা চড়াই চিড়িক দিলেই আরেক খোপের মালিক দাঁড়কাকে ঠোক্কর মারে খুলিতে।

কিতকিত খেলাটা কোনভাবেই আর সম্ভবপর নয় কারণ এক দীর্ঘদেহী ভদ্রলোকের বাম মুঠোর মধ্যে আমার ডান মুঠো গুঁজিমুঁজি সেঁধোতে পারে না ইদানীং।
...

প্রত্যেক আঙুলে নখের খাঁজে লেগে থাকা পিণ্ড তৈরির তিলের কালি ছাড়া আর যা রয়ে গেছে তা হল মাইলকেমাইল হেলদোলহীন কুচুক্কুরে এক কুৎসিত হেঁটে চলা। জুতোর তলায় কালো খাদান পথ যার গালভরা নাম রেখেছি জীবন।
নিয়তির অনুমোদন মিললে ওরই মধ্যে মধ্যে পেরিয়ে যাচ্ছি কিঞ্চিৎ আলোভালোর ডোরাকাটা মুহূর্তদের। জেব্রা ক্রসিং এর উত্তর আধুনিক ন্যারেটিভ গোছের অনুভব।
অবিমিশ্র ন্যাকামি। প্রতিনিয়তই।

রাত বাড়লে কেবল মাথার মধ্যে রোজনামচার পাতাগুলো কিছুটা অস্থির এপাশ ওপাশ ফেরে। কাটাকুটি বন্দিশের বোল ফোটে।
এই আর কী।

No comments:

Post a Comment