আধোঘুমে পুরোনো কালের পুকুর ঘাটের ভোর ছেয়ে যায় না দেখার সবটা জুড়ে। সোনালী ঘণ্টাসময় বা নীলাভ ঘণ্টাসময়ের কেতাবি হিসেবের বাইরে যে অপার্থিব মৃদুল আলোকপর্দা টাঙানো সময়, এ হল সেই প্রভাতক্ষণ। এসময় স্থলপদ্মের তরুণ ঝাড়ে রোদ ও ফুলের মধ্যে গোলাপি শাদার ছোঁয়াছুঁয়ি খেলা চলে। শতমূলীর টুকটুকে ক্ষুদে ফল অচেনা সুগন্ধ ছড়ায়। নিজেদের শরীরে রাশিকৃত সজনে ফুল বিছিয়ে রাখে দুর্বাচর। গাছগুঁড়ির গায়ে দারচিনি ফাটল পথে ক্রমশ উপরে আরও উপরে উঠে চলে কুরকুট। মুখে দুধ শাদা ডিম।
বর্তমান আর ভবিষ্যৎ পথ চলে যত্নবান যৌথতায়।
একটুক্ষণ দেখতে শুরু করলেই মাথার ভেতরে তালপাতার বাতাস বয়। এক ঘটি অদ্যিকালের কুয়োর জল আর এক মুঠো শেতলার থানের মাটি ঘুলিয়ে যেন কপালে বুকে লেপে দেয় শাঁখাপলা লেগে থাকা হাত কোশ।
আরাম। বড় আরামে ঝিম ধরে।
কোষে কোষে পৌঁছে যায় আধচেনা বৈরুতি সুবাস। খানিক বন্য খানিক পোষ মানা শাকশাখালি। বেতের টুকরি আলগোছে পড়ে থাকে অগোছালো ফুলেদের সামলে। ক্ষীণস্পর্ধী বাতাসে আলতো জলঢেউয়ে ঢলা এ শালুক থেকে ও শালুকে লাফানি ডাকছানা থমকে চেয়ে দেখে পায়ে পায়ে গুঁড়ির দিকে এগোয় কুড়ানি। জাদুমুগ্ধ।
হট্টিটি ডাক ভেসে আসে।
ডিড ইয়্যু ডু ইট?
অতীত পথ আগলে দাঁড়ায়। তার হাতের খেরোর খাতা তাকিয়ে রয় কৈফিয়ত তলব চোখে।
চিচিং ফাঁক।
ভোর হারিয়ে যায় দিনের বিরাট হাঁয়ের গহ্বরে।
আর ফেরেনি কখনও।
No comments:
Post a Comment