Thursday, September 12, 2019

পূরবী

হাওয়ার ঝাপটা আসা খোলা জানলার গা ঘেঁষা টেবিলটার উপরে হাট করে রাখলেও সব উপন্যাসের সব পাতা ফরফর করে ওড়ে না। পড়াটা মসৃণ হয় না। লক্ষ করলে কারণ জানাও যায়। আর্দ্রতা।
সব বাতাস দখিনা হয় না যে, কিছু জোলো হয়।  স্যাঁতস্যাঁতে।
বড্ড ভারী। কামিনী গন্ধের চলন।
জল গিলে গিলে সেঁটে থাকে পাতারা, একে অপরের শরীরে। টিঁকে থাকার পারস্পরিক অবলম্বন। লেপ্টে থাকা পাতাদের দুই আঙুলে ঘষটে ঘষটে আলাদা করতে হয়। তবেই এগোয় উপন্যাস। হাওয়াটা বয় তখনও, তিরতির।
তার শুভ নাম, পূরবী।

প্রত্যহ যাপনও কেবলই ইমনকল্যাণে গড়া হয় না। এর সঙ্গে দরবারী'র আখমাড়াই কলে নিংড়ে নিংড়ে বিন্দুবিন্দু টনটনে অনুভবে তৈরী হয় যে বেঁচে থাকা, সেটাই সম্পূর্ণ অস্তিত্ব। ছটফটানি স্বাভাবিক। আরও স্বাভাবিক ছিঁড়েখুঁড়ে ছিটকে বেরিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা। কিন্তু সঠিক নয়।
নিজেকে গড়তেই পিষতে দিতে হয়।
শুদ্ধ পীড়ন বড় অমূল্য প্রাপ্তি। জীবন যখন ক্রমাগত পিষে পিষে একসময় খামচে বের করে আনে এক খাবলা দেওয়ালে ঠেসান দেওয়া শ্রান্ত যন্ত্রণা, সানাইরঙা বিকেলে একরাশ শিউলি জড়ো হয় এলোমেলো কোলে। গভীর একাকী স্বরাট ডাক ওঠে নাভীমূল হতে।
তার শুভ নাম, পূরবী।

No comments:

Post a Comment