Monday, September 24, 2018

ধ্যাত্তেরিকা!

গুটগুটি বেলায় একবার জন্মদিনের উপহার হিসেবে প্যাস্টেল আর ওয়াটার কালারের সেট এর সঙ্গে পাওয়া পেন্সিল বক্সের মধ্যে পেন্সিল, শার্পনার, খানদুয়েক ব্রাশ ছাড়াও ছিল ব্রুমওয়ালা মুসাম্বি গন্ধী ইরেজার আর মজাদার টিউবে ভরা ঝিমঝিম গন্ধওয়ালা সোনা রঙের আঠা।

আজকাল কি মেলে সেই ভুটানি গিফট বক্স?
খুবই মেলে তবে ভুটানি নয়, চীনেটাই মেলে। 

কাগজ তা সে সাদাই হোক কী রংদার, টিউবের পেট টায় অল্প অল্প চাপ আর কাগজ যেন বিন্দু বিন্দু রূপকথার আস্তানা নিমেষে। ওহ্, একটা কথা বলে রাখি, ওপর থেকে সিধে কড়কড়ে রকমে দিদিমণিদের মত করে দেখলে সেসব ঘণ্টা বুঝবে, মাটিতে কাগজ রেখে উব্বুত হয়ে শুয়ে, চাইতে হবে নাকটা কাগজের কিনারায় আলতো ছুঁইয়ে।

আজকাল কি কেউ শোয় সেভাবে মাটিতে?
শোয় তো নিশ্চয় তবে মাটিতে নয়, ডিভানে।

পেটমোটা ক্ষুদে ক্ষুদে মালভূমি নজরে আসবে। তার তাদের ভেতরে ঝিকিমিকি দিয়ে চেনা আসবাবের অচেনা টুকরোরা গা ঘেঁসাঘেঁসি শুয়ে বসে তাও নজরে আসবে। সে ভারী শিরশিরে অবাক করা জগত। বানানোর চাবিকাঠি তোমার হাতেই। কিন্তু একবারটি তৈয়ের হলেই নজর তোমার বন্দী তাদের রাজ্যে। চাবিকাঠির মালিকানা বদলে যাবে, উমান পাবে না।

আজকাল কি সেরম চাবিকাঠির চল আছে?
লকের চল আছে তবে চাবি তাতে কমই লাগে।

অনেক ভ্যানতাড়া হল। এবারে ঝেড়ে কাশো বাপু। বলতে কী চাও, শুনি?

আজ দেখলাম বুঝলে, বৃষ্টি শেষে, সেই আঠার মত আলো।
পুব আকাশের একদিক শ্লেট কিন্তু আরেকদিকে নীলের ঢেউ জাগছে, সার্চ লাইটের মত ফিনকি ফিনকি আলোর তার হিলহিলিয়ে পড়ছে।
এদের কাজকর্মের মাঝেই কোন ফাঁকতালে গলিঘুঁজি গলে বেরিয়ে এসেছে সেই রূপকথার আঠালো আলো।

আমগাছের ওই দাহশেষে জল ফোস্কা ওয়ালা পোড়া কাঠের মত ভেজা দক্ষিণমুখী মরা ডালটাকে পেঁচিয়ে পেঁচিয়ে উঠতে চাইছে আরও উপরের পিঁপড়ে খাবলানো রক্তাল্পতায় ভোগা ডিগডিগে ন্যাতা পাতাগুলোর সিঁথিতে। কুরূপা প্রকৃতির গায়ে মাথায় হাত বুলিয়ে আদর করছে সুরূপা প্রকৃতি। কী অপার্থিব মায়া!

বহুদিন যাবৎ খুব জ্বরে পড়ে থাকা খোকাখুকুর গায়ে মাথায় মায়ের হাত বুলিয়ে সোভিয়েত দেশের গল্প গুলো খুব খুব আস্তে আস্তে বলতে বলতে বার্লি খাওয়ানোর ছবিটা দেখলাম, জান?

ভালবাসাবাসি আলো। আদর আদর আলো।
দেখলাম।

ধ্যাত্তেরিকা! সাত কাহনে এই খ্যাটন!
ডাক্তার দেখাও বুঝলে, চোখের ডাক্তার আর সঙ্গে মাথারও। তোমার না পরীক্ষা সামনে???

No comments:

Post a Comment