সেবার কী হল জানো এক চাষা ক্ষেতেতে,
নিড়ানি দিতেছে বসে একটেরে ভূঁয়েতে।
হেথা হোথা নেই কেউ নিজ্ঝুম চারিধার,
হঠাৎ শোনে সে স্বর চাচা মোরে কর বার।
কে ডাকে দিগরে নেই একজনও মনিষ্যি,
আমারে ধরেছে তবে এ মামদো অবিশ্যি।
ডরে কাঁপে চাচাজান ঠকাঠক হাঁটুতে,
উঠতে নজরে এল প্ৰদীপটা ঘাসেতে।
ঘষটে কোলের কাছে যেই তারে টেনেছে,
মেঘরঙা টেকো এক আল জুড়ে বসেছে।
(আহা!) কর কী হালার পুত ভেঙে গেল আল তো,
চাপ কেন নাও মিঞা জুড়ে দেব আলতো।
আগে তুমি বল দেখি কী কী খোয়াব দেখলে,
কেমন হবে সে বল সবকটা মিটলে?
ভ্যাবল চাষাটি ভাবে কী আপদ জুটলো,
কাজ কাম সব দেখি আজ শিকে উঠলো!
দশাসই গতরেতে জোড় হাত দৈত্য,
ঝুঁকে বলে হুকুমআকা আমি তব ভৃত্য।
হুকুমাকা হুকুমাকা বিরিয়ানি খান তো?
আচ্ছা জ্বালালে বাপু এই তুই থাম তো।
চাইনে হুকুমদারী নিজ হাতে খেটে খাই,
চাও যদি লেগে পড়ো হালখান ধরো ভাই।
বিরানি হবে না মোর ভেতো পেটে সেদ্ধ,
এক থাল ভাত দেবে সর পুঁটি শুক্তো?
চিনেছি তোমারে আমি প্রদীপের দানো হও
মাঠ ভরা ধান ওই দেখছ তো ভেবে কও―
পারবে আমারে দিতে তৃপ্তি সে ফলানোর,
আছে "কি" তোমার গেঁজে খুশিয়াল বলানোর?
ঘাম জমে দুধ হয় ধানের ওই গর্ভে
চাষাবাদ ছাড়িয়ে কি মারবে ও মরবে?
ভরা মাঠে হাওয়া বয় গালচে যে রঙদার
জাদুতে সে হুট হাজির এ কেমন আবদার!
সাঁঝবেলা ঘরে ফিরি বিবিজান সোহাগে,
পিড়ি পেতে আলাপন মৌটুসি পরাগে।
চৌপর দিন ভর যত শ্রম ভোলাতে,
পারবে তো এঁকে দিতে সেই হাসি ঠোঁটেতে?
আমার তাকতে স্রেফ চড়া সুখই প্রাপ্তি,
পারি নাকো জোগাতে যে শান্ত সুষুপ্তি।
দিতে পারি বিলাস ও জহরত দুনিয়ার,
ভালোবাসা গড়ে দেব এ বাহির ক্ষমতার।
থুতনিটা ঝুলে পড়ে আলাদিন–এ–দৈত্যর
সরল খুশিতে ওড়ো জালালি ও কইত্তর।